Source- Samakal

মগজ ধোলাই ৫.০ঃ সমাজের মূলস্রোতের বাইরে থাকা শিশুদের বই-পড়ার উৎসব

গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এবং কেকে ফাউন্ডেশন ‘মগজ ধোলাই’ এর পঞ্চম পর্ব আয়োজন করতে পেরে আনন্দিত। “মগজ ধোলাই” সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে বই পড়ার আনন্দ উদযাপনের একটি উৎসব। ২ মার্চ, ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমি মাঠে বিকাল ২.৩০-৪.৩০ পর্যন্ত আয়োজিত মগজ ধোলাই ৫.০, সমাজের মূলস্রোতের বাইরে থাকা শিশুদের মাঝে বই পড়ার অভ্যাসকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক স্থাপন করেছে।  

২০২৩ পর্যন্ত প্রজেক্ট পথচলা মগজ ধোলাইয়ের চারটি পর্ব আয়োজন করেছে। পূর্ববর্তী পর্বগুলোর সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে কেকে ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় আয়োজিত হয় মগজ ধোলাই ৫.০। প্রথম চারটি পর্বে, অংশগ্রহণকারী হিসেবে ছিল ৩২ টি বিদ্যালয় এবং অলাভজনক সংস্থার ৬৭৫ জন শিশু। এবছর ৬টি বিদ্যালয় ও সংস্থার ৯৬টি মেধাবী শিশু আয়োজনটিতে অংশ নেয় (জয় সকল শিশুর শেল্টারহোম, বাসা এন্টারপ্রাইজ শেল্টারহোম, ডেইরি ফার্ম প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়, শিশু বিকাশ কেন্দ্র এবং জাগো ফাউন্ডেশন স্কুল)।  শিশুদের বয়সের ভিত্তিতে দুইটি দলে ভাগ করা হয়, ‘উইংস’ (৪র্থ শ্রেণি- ৬ষ্ঠ শ্রেণি) এবং ‘প্লেনস এন্ড পাইলটস’ (৭ম শ্রেণি – ৮ম শ্রেণি)।  

পূর্ববর্তী বছরগুলোর মতোই, মগজ ধোলাই কেবলমাত্র বইপড়া বিষয়ক ছিল না, এর সাথে ছিল তরুণ মানসদের বিভিন্ন বিনোদিনমূলক কার্যক্রমে জড়িত করা যাতে তাদের বুদ্ধির ব্যবহার উদ্দীপ্ত হয়। প্রত্যেক দলকে আয়োজনের এক মাস আগে দুটি করে বই দেওয়া হয় পড়ার জন্য। বয়সে বড় দল পড়ে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এর ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ এবং শাহরিয়ার কবির এর ‘নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড়’। এর বিপরীতে, বয়সে ছোট দলকে দেয়া হয় মার্ক টোয়েন এর ‘এডভেঞ্চারস অফ হাকলবারি ফিন’  এবং হুমায়ূন আহমেদ এর ‘বোতল ভূত’। দুই বয়সের দল থেকেই প্রত্যেক বিদ্যালয় বা সংস্থার ৮ জন শিক্ষার্থীর একটি দল অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী শিশুদের নির্বাচন করার জন্য প্রাক-মূল্যায়ন করা হয়, যাতে প্রকৃত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর দ্বিগুণ সংখ্যক শিশু অংশ নেয়। এই বন্ধুত্বপূর্ন প্রতিযোগিতা তাদেরকে বইতে আরো বেশি করে মনোযোগী হতে সাহায্য করে।     

বই এর পাঠ্য থেকে প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে ‘হিট দা গোল পোস্ট’, ‘কুইজ রিলে’ এবং ‘সলভ দা পাজল’ এর মতো গেইম আয়োজন করা হয়, যা শিশুদের শিখন অভিজ্ঞতা বাড়িয়েছে এবং তাদের বিশ্লেষণক্ষমতাকে উৎসাহিত করেছে। ফলাফল সংকলনের পর প্রতিটি বয়সভিত্তিক দলের বিজয়ী এবং রানার-আপদের পুরস্কৃত করা হয়। 

হবিগঞ্জ-৪ আসনের নবনর্বাচিত সাংসদ সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শিশুদের সাথে কথা বলেন। অংশগ্রহণকারী বিদ্যালয় এবং সংগঠনগুলো তাদের শিশুদের এমন একটি প্রাণবন্ত উৎসবে অংশগ্রহণ করাতে পেরে নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। সহযোগী সংগঠন, উপস্থিত বিদ্যালয় ও এবং অনুষ্ঠানটি সাফল্যমণ্ডিত করতে জড়িত সকলের প্রতি গিভ বাংলাদেশ আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।  

প্রজেক্ট পথচলা সম্বন্ধে

২০১৪ সালে যৌনকর্মীর শিশুদের মানসিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তাদের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করার উদ্দেশ্য নিয়ে গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রজেক্ট পথচলা শুরু করে। এসব শিশুদের জীবনের শুরু থেকেই স্থায়ী প্রভাব রাখা পথচলার উদ্দেশ্য। তাদের মানসিক বিকাশ এবং পৃথিবীকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিকে উন্নত করতে একইভাবে সেশন পরিকল্পনা এবং পরিচালনা করা হয়। প্রত্যেক সেশনেই থাকে ভিজুয়াল এবং সেশনগুলো হয় অংশগ্রহণমূলক যাতে শিশুরা বিভিন্ন বিষয় সহজেই বুঝতে পারে। পথচলার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে যৌনকর্মীদের শিশুদেরকে নিয়ে সমাজের যে দৃষ্টিভঙ্গি তাকে পরিবর্তন করা। 

যোগাযোগ

আহমেদ ফাহমি

প্রজেক্ট ম্যানেজার, প্রজেক্ট পথচলা

গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন 

ahmedfahmi706@gmail.com

+8801672265706